কানে কম শোনা বা শ্রবন হীনতা একটি রোগ। কোন কোন লোককে একটু জোরে কথা না বললে শুনতে পায় না। অনেক লোক আবার কিছুই শুনতে পায় না। খুব কষ্ট করে তাদের শব্দ শুনতে হয়। অনেকে তো একেবারেই শুনতে পায় না। এরা হল শ্রবণ প্রতিবন্ধী। এই শ্রবণ প্রতিবন্ধী এবং বৃদ্ধদের শ্রবণ হীনতা কোনো চিকিৎসায় সারানো যায় না। খুব কম ক্ষেত্রে হলেও এই রোগ বংশগত হতে দেখা যায়। শিশুর পাঁচ থেকে ছয় মাস বয়সে এটি ধরা পড়ে।
রোগের কারণ
(১) কানে ফোড়া হলে বা কোন পোকা মাকড় ঢুকে গেলে পরিণামে শ্রবন হীনতা রোগ হতে পারে।
(২) কোন কঠিন রোগ যেমন টনসিল,মামপ্স,টাইফয়েড, সিফিলিস রোগের পরিণামেও হতে পারে।
(৩) কানে জল ঢুকে গিয়ে কান গলা রোগ হয়। সেই রোগের উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে শ্রবন হীনতা রোগ দেখা যায়।
(৪) কানে আঘাত লাগলে, কানের কাছে বিকট শব্দ হলে, বাজি ইত্যাদির জোরদার শব্দে শ্রবন শক্তি নষ্ট হতে পারে।
(৫) বাচ্চারা যথাকালে অর্থাৎ এক দেড় বছর বয়সেও বাবা, মা,দাদা,দিদি বলতে না পারলে কিংবা নাম ধরে ডাকলে কোন প্রতিক্রিয়া প্রকাশ না করলে অবিলম্বে কানের ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।কানে কিছু শুনতে না পেলে বাচ্চারা কথা বলতে শিখবে কি করে? এইসব বাচ্চারা তাই কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারে না।
ঘরোয়া চিকিৎসা
(১) সমান মাত্রায় সরষের তেল,মধু ও পাকা আমের রস একসঙ্গে ভালো করে নেড়ে কয়েক ফোঁটা করে দিনে তিন থেকে চারবার দিলে শ্রবন হীনতায় উপকার পাওয়া যায়। এতে শ্রবণশক্তি বাড়ে।
(২) রাতে শোয়ার সময় কয়েক দিন কয়েক ফোঁটা করে দারুচিনির তেল কানে দিলে উপকার পাওয়া যায়।
(৩) কয়েক ফোঁটা রাইয়ের তেল দিনে দুই থেকে তিনবার কানে দিলেও উপকার পাওয়া যায়।
(৪) নিয়মিত কিছুদিন তুলসীপাতার রস সামান্য গরম করে কানে দিলে শ্রবণ শক্তি বাড়ে।
(৫) সামান্য সরষের তেল গরম করে সপ্তাহে অন্তত একবার করে কানে দিলে শ্রবন শক্তি বৃদ্ধি পায়।
কানে ময়লা জমলে
কানের ভিতরে ময়লা জমলে কিংবা কানের পর্দা অপরিষ্কার হলে কানের শ্রবণ শক্তি কমে যায়। এই অবস্থায় সোহাগার খই মিহি করে চূর্ণ করে সামান্য পরিমাণে কানে দিয়ে তারপর কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিতে হবে। এতে কানের ভিতরে গ্যাস উৎপন্ন হয়ে ভেতরের ময়লা বেরিয়ে আসবে এবং কানের পর্দা পরিষ্কার হয়ে যাবে।