সুপারিচিত এই ফল টি শ্রীফল বা অমৃত ফল নামেও পরিচিত। এই ফলের গুনাগুন আপারিসীম। আয়ুরবর্ধক আমলা বা আমলকি আমাদের শরীরের রোগ উৎপত্তির মূল কারণ বায়ু, পিত্ত ও কফকে নিবারণ করে। নিয়মিত আমলকি সেবন করলে শরীর নীরোগ হয়, চোখের জ্যোতি বাড়ে, শ্রীবৃদ্ধি হয়।
রোগে ভোগে আমলকির ব্যবহার
মধুমেহ : টাটকা আমলকির রসে সামান্য লবন মিশিয়ে সেবন করলে মধুমেহ আরোগ্য হয়।
বর্ধক্যজনিত সমস্যা : শুকনো আমলকির সঙ্গে কালো তিল মিহি করে চুর্ণ করে শিশিতে ভরে রেখে দিতে হবে। এই চূর্ণ দুই চামচ মাত্রায় নিয়মিত ঘী অথবা মধুর সঙ্গে সেবন করলে বার্ধক্যজানিত অবসাদ ক্লান্তি ও অন্যান্য সমস্যা লাঘব হয় এবং নতুন উদ্যম লাভ করা যায়।
জন্ডিস বা কমলা রোগ : টাটকা আমলকির রস তিন চামচ ও এক চামচ মধু মিশিয়ে তিনবেলা সেবন করলে জন্ডিস রোগে উপকার পাওয়া যায়।
অর্শ : আমলকি চূর্ণ দুধের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে অর্শ রোগ আরোগ্য হয়। মি কমপক্ষে এক মাস নিয়মিত সেবন করতে হবে।
রক্তপাত : কোনোভাবে চোট লেগে রক্তপাত হতে থাকলে টাটকা আমলকির রস লাগাতে হবে। অবিলম্বে রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
শ্বেত প্রদর : এক চামচ আমলকি চূর্ণ দুই চামচ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে একমাস সেবন করলে শ্বেত প্রদর আরোগ্য হয়।
প্রস্রাবে জ্বালা : আমলকি ১০ গ্রাম ও হলুদ ১০ গ্রাম মিশিয়ে পাচন তৈরি করে খেলে প্রস্রাবের জ্বালা কমবে।
মহিলাদের বহুমূত্র রোগ : ২০ গ্রাম আমলকির রস, একটি পাকা কলা ও দুই চামচ চিনি মিশিয়ে কিছু দিন খেলে মেয়েদের বহুমূত্র রোগ দূর হয়।
চুলের রোগ : অকালে চুল পাকলে বা চুল ঝরে যাতে থাকলে আমলকি ব্যবহারে প্রভুত উপকার পাওয়া যায়। আমলকি চূর্ণ জলে মিশিয়ে তার মধ্যে তুলসীর পাতার রস মেশাতে হবে।এই মিশ্রন চুলের গড়ায় মালিশ করে ১০ মিনিট পড়ে ঠান্ডা জলে মাথা ধুয়ে ফেলার পরামর্শ দেবেন। এভাবে মাসখানেক আমলকির রস ব্যবহার করলে চুল পোড়া ও অকা বন্ধ হবে।
মুত্রাশয়ের পাথরি : আমলকি চূর্ণ কাঁচা মুলোর সঙ্গে খেলে মুত্রাশয়ের পাথরি রোগে উপকার পাওয়া যায়।
নেত্রজ্যোতি : আমলকি ভেজানো জলে চোখ ধুলে চোখের জ্যোতি বাড়ে। গরুর দুধের সঙ্গে আমলকি চুর্ণ মিশিয়ে সেবন করলে চোখের রোগে উপকার পাওয়া যায়।
কৃমি : টাটকা আমলকির রস দুই চামচ পরিমানে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে বড়ো কিছু সব রকমের কৃষ্টি নষ্ট হয়। এটি খেতে হবে এক সপ্তাহ, সকালে খালি পেটে।
চুলকানি : ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, ব্রণ ও চুলকানি তে আমলকি ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যায়। আমলকি চুর্ণ নারকেল তেলে মিশিয়ে চুলকানি তে মাখতে হবে। আমলকি ঘষে লাগালে ফোঁড়া, ফুসকুড়ি, ও ব্রণ ইত্যাদিতে উপকার পাওয়া যায়।
হৃদয় দুর্বল : হাতের দুর্বলতা কাটানোর জন্য আমলকির রস ব্যবহার করতে হয়। দুপুরে অর্ধেক আহারের পর ৫-৬ চামচ টাটকা আমলকির রস আধ গ্লাস জলে মিশিয়ে পান করতে হবে, পরে আহার করবে হবে। এভাবে একবেলা আহারের মাঝে আমলকি রস তিন সপ্তাহ সেবন করতে হবে।