ফুসফুস ও শ্বাসনালী রোগ নিষ্কৃতি ঘরোয়া পদ্ধতি

হাঁপানি

(১) প্রচন্ড হাপ ধরলে বা হাতটান হতে থাকলে ওষুধ ছাড়াই তাৎক্ষণিক আরাম পেতে পারেন। শুধু শ্বাস বদল করে, জোরে টান উঠতে থাকলে হাতের পিঠ নাকের সামনে ধরে শ্বাস পরীক্ষা করুন। জোরে জোরে শ্বাস ফেললেই বুঝতে পারবেন কোন নাকে শ্বাস চলছে। মনে রাখবেন একই সময়ে কখনও দুই নাকে শ্বাস প্রশ্বাসের কাজ চলে না।

যে নাসিকায় শ্বাস চলবে সেটা চেপে বন্ধ করে বিপরীত নাকে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ শুরু করবেন। অর্থাৎ ডান নাকে নিঃশ্বাস বইলে, সেটা চেপে বাম নাকে বদল করবেন। এভাবে দশ পনের মিনিটেই হাঁপানির প্রবল টান থেমে যাবে।

(২) হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, হুপিং কাশি, সর্দি, কাশি অর্থাৎ ফুসফুস, পেট, নাক ইত্যাদির রোগে সোহাগার খৈ ও মূল হটি অত্যন্ত ফলপ্রদ। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা কেন্দ্রে এই রোগটি ব্যবহার করা হয়।

সোহাগার খই

প্রয়োজন মতো সোহাগার খই করে নিতে হবে। সোহাগার টুকরো ভেঙে ছোট করে একটি লোহার কড়াই তে উনুনে চাপিয়ে দেবেন। সোহাগা প্রথমে গলে যাবে। গলে শুকিয়ে গিয়ে আস্তে আস্তে ফুলে খইয়ের মত হয়ে যাবে। সবটা সোহাগা খই হয়ে গেলে নামিয়ে গুঁড়ো করে একটা কাপড়ে চেলে একটা শিশীতে ভরে রেখে দেবেন।

মূল হাটি চূর্ণ করে চেলে সোহাগার খৈ এর চুর্ণের সঙ্গে মিশিয়ে রাখবেন। ওষুধটি এবার আপনার হাতের নাগালে রইল। প্রয়োজনমতো অনুপান সহযোগে ব্যবহার করবেন।

(১) আধা চামচ এই ওষুধ মধুর সঙ্গে নেড়ে দিনে দু তিনবার চেখে খেতে হবে। মধুর অভাবে জল চলবে। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে চারভাগের একভাগ মাত্রা ব্যবহার করবেন। বয়স অনুপাতে মাত্রা ঠিক করে নিতে হবে। এই ওষুধ সেবন করার সময় ঠান্ডা জিনিস যেমন, কলা, দই, খাওয়া চলবে না।

(২) ওষুধ চূর্ণ এক চিমটে গরম জলে গুলে দিনে তিনবার খেলে সর্দি সেরে যাবে।এক চিমটে ওষুধ মুখে ফেলে’ চুষে খেলে কাজ হবে। এতে সাধারণ হাঁপানি ভালো হয়।

ছোটদের সর্দি-কাশি ছাড়াও হাঁপানিতে এই ওষুধ বিশেষ ফলপ্রদ। কঠিন ধরনের কাশি, শুকনো কাশি, হুপিংকাশিতে এই চূর্ণ আশাতিত কাজ করে।

(৩) একটি পাত্রে 3টি ডুমুর 24 ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে ওই জলে ডুমুর গুলো সেদ্ধ করবেন। এই সেদ্ধ ডুমুর জলটা খেয়ে নিতে হবে। হাঁপানিতে আরাম পাবেন।

উপকরণ : ছোট পিপুল, বড় হরিতকী খোসা, শেত পুনপর্ব, চিত্রকের শেকড়ের ছাল, বৃহরাড় খোসা, শুকনো আমলকি, অশ্বগন্ধা নাগোরী, খাঁটি বিধারা, গোলমরিচ।

কোন কবিরাজী বা ভালো দশকর্মার দোকানে এগুলো পাওয়া যাবে। প্রত্যেকটি উপকরণ কিনতে হবে 200 গ্রাম করে। তারপর পরিষ্কার করে আলাদা আলাদা গুড়ো করে ভালোভাবে চেলে একসঙ্গে মিশিয়ে নেবেন। এবারে ভালো আখের গুড় জ্বাল দিয়ে নারকেল নাড়ু পাকানোর মত করে, এই মিশ্রণটি দিয়ে সমপরিমাণের গুলি করে নিতে হবে। গুলির ওজন যেন 6 গ্রাম ওজনের হয়। তৈরি হয়ে গেলে গুলি ছায়াতে রেখে শুকিয়ে নেবেন। এটি হাঁপানির মহৌষধ।

যাদের সবসময় কম-বেশি হাঁপানির টান থাকে কিংবা সামান্য হাঁটাচলা বাড়ি ভাঙার শব্দ করে জোরে জোরে পড়তে শুরু হয়, তাদের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রত্যক্ষ ফলপ্রদ।

প্রতিদিন সকালে একটি করে গুলি গরুর দুধের সঙ্গে খেতে হবে। এই ওষুধের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়ার কোন আলাদা বিধি নিয়ম বা বাছা বিচার নেই।

এই ওষুধ নতুন বা পুরোনো হাঁপানি ছাড়াও অন্ত্র, যকৃত, ফুসফুস, গলা, হৃদয়ের রোগ ও পেটের নানা রোগে উপকারী ম

লক্ষ্য রাখবেন, গুলি তৈরি হবার পরে প্লাস্টিকের সিটে খবরের কাগজে শুকোতে দেবেন না। একটা বস্তার ওপরে পরিস্কার কাপড়ের ওপর বিছিয়ে দেবেন।

হাঁপানি রোগীর পথ্য

সবুজ শাক যেমন পালং, মেথি, বেথো, চৌলাই, ইত্যাদি রসুন, আম, পেপে,কমলা,মুসুম্বি,বেদানা,বাতাবি লেবু, টমেটো, ইত্যাদি ফল,ছাগলের দুধ এবং হালকা সহজপাচ্য খাবার ।

অপথ্য

যেকোনো ধরনের ঠান্ডা পানীয়, দই, কলা,ঠান্ডা ভাত, তেল, গুড়, তরমুজ, টক,মাংস ইত্যাদি। সেইসঙ্গে বিড়ি সিগারেট, গাঁজা, তামাক, মদ নিষিদ্ধ।, রাত্রি জাগরন ক্ষতিকারক।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *