পেটের গোলোযোগ দূরকরতে দৈনন্দিন রুটিন

জ্বরের মতোই পেটের রোগেও হামেশাই মানুষকে ভুগতে হয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষ পেটের রোগে বেশি ভোগে।

সাধারণত: খাওয়া-দাওয়া, জল, পাচনতন্ত্রের গোলযোগ, অপরিচ্ছিন্ন পরিবেশ, ইত্যাদি নানা কারণেই পেটের রোগ হতে দেখা যায়। পেট ব্যথা, পেটে গ্যাস, পেট গুড়গুড়, শূল বেদনা, বদহজম, বমি, কৃমি, অর্শ ছাড়াও অনেক সংক্রামক রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা জানানো হল।

পেটে গ্যাস, পেট ফাঁপা

পেটে গ্যাস হলে খুবই অস্বস্তি হতে থাকে, এই গ্যাস ঊর্ধ্বমুখী হলে জীবন সংশয়ও হতে পারে। এরকম অবস্থা হলে ১২৫ গ্রাম দই বা ঘোলের মধ্যে দু গ্রাম জোয়ান এবং আধ গ্রাম বিটনুন মিশিয়ে খেতে হবে। এই ওষুধে কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়।

সেবনবিধি : দুপুরে খাওয়ার পরে সেবনীয়। প্রয়োজন অনুযায়ী এক থেকে দুই সপ্তাহ ব্যবহার করবেন।

কুপথ্য : কচু, ফুলকপি, মূলো, যে কোনো তেলে ভাজা, ঝাল যুক্ত খাদ্য, ভাং নিষিদ্ধ।

রসুন ফলপ্রদ

গ্যাসের অস্বস্তি থেকে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্ত হতে চাইলে রসুন অত্যন্ত কার্যকরী। দু এক কোয়া রসুন মনাক্কার সঙ্গে চিবিয়ে খেলে সঙ্গে সঙ্গে পেটের গ্যাস বেরিয়ে যাবে।

পেটের ব্যথা

বায়ুজনিত পেটব্যথায় জোয়ানের চূর্ণ এক চামচ ও সামান্য বিট নুন একগ্লাস জলে মিশিয়ে খেলে পেট ব্যথা সেরে যাবে। পেট ফাঁপা, পেট শক্ত হয়ে যাওয়া, পেটের গ্যাস ইত্যাদিও এতে ভালো হয়ে যায়।

জোয়ান ফলপ্রদ

জোয়ানের বায়ুনাশক ক্ষমতা অতি চমকপ্রদ। এরমধ্যে চিরতার কুটতা, হিং এর বায়ুনাশক গুন এবং গোলমরিচের পাচাগ্নি উদ্দীপক গুন বর্তমান। জোয়ান চূর্ণ খেলে, কাশি, পেটে অস্বস্তি, বদহজম, প্লীহার সমস্যা, শ্লেষ্মা, শূল বেদনা, কৃমি, অর্শ, বমি ভাব, ক্ষুধামন্দ, অরুচি ইত্যাদি সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। খেতে হবে ছয় সপ্তাহ।

অমৃতধারা

এই ওষুধটি দোকানেও কিনতে পাওয়া যায়। তবে চেষ্টা করলে আপনি ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন।

প্রণালী : প্রতিটি পাঁচগ্রাম করে উৎকৃষ্ট ভীমসেনা কর্পূর, পিপারমেন্ট ও জোয়ানের আরক একটি পরিষ্কার শিশিতে নিয়ে দশ পনের মিনিট ভালোভাবে নাড়তে থাকুন। একসময় দেখবেন একটি তরল হয়ে যাবে। এবার শিশিটি কিছু সময় রোদে রেখে দিলে জলের মতন হয়ে যাবে। এটি হলো অমৃতধারা।

এই ওষুধ ঘরে থাকলে নানা রোগে মন্ত্রের মতো ফল পাবেন।

ব্যবহারবিধি: দুই থেকে তিন ফোটা অমৃতধারা জলে মিশিয়ে খেলে পেটের ব্যথা ভালো হয়। এটি বাতাসা বা মিছরি সহযোগেও খাওয়া চলে।

প্রথম মাত্রায় সন্তোষজনক কাজ না পাওয়া গেলে আধঘন্টা পরে আরেক মাত্রা দেবেন। তাতে নিশ্চিত ফল পাওয়া যাবে।

ঠান্ডা জলে দুই চামচ অমৃতধারা মিশিয়ে প্রতিদিন দুইবেলা খেলেই পেট সংক্রান্ত যে কোন সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

অম্বল বা অম্লপিত্ত

অম্লপিত্ত রোগে মাংস, তেল, ঘি, কলাইয়ের ডাল, গরম খাবার, টক বা টকরস যুক্ত খাবার বর্জনীয় । এই রোগে খুব সতর্ক হয়ে খাদ্য খাবার খেতে হয়।

পথ্য : আমলকি, ডুমুর, শশা, পুরনো চাল,গরম দুধ,বেদানা বা ডালিমের রস, আঙুর, মৌরি, চাল কুমড়ো, ছাতু ইত্যাদি খাওয়া চলতে পারে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *