পায়োরিয়া দাঁতের মারাত্মক রোগ। এতে দাঁতের গোড়ায় মাড়িতে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ হয়ে যায়। প্রথম অবস্থায় দাঁতের গোড়া ফুলে ওঠে, মাড়ি লাল হয়ে যায়। মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তেও দেখা যায়। এতে মুখে প্রচন্ড দুর্গন্ধ হয়, মুখের স্বাদ নষ্ট হয়। জিভে নোংরা ভাব হয়। দাঁত বা মাড়ি ছুঁলে ব্যথা লাগে।
মনে রাখবেন, বাচ্চাদেরও দাঁতের নানা উপসর্গ থাকে যেমন, দাঁতের গোড়া ফোলা, দাঁত ব্যথা ইত্যাদি এসব কিন্তু পায়োরিয়া নয়, এই রোগ সাধারণত বয়স্কদেরই হয়।
দাঁতের গোড়ায় খাদ্যকণা জমে পচে গিয়ে পায়োরিয়া রোগ হয়। এই রোগীদের প্রায়ই কোষ্টকাঠিণ্য থাকতে দেখা যায়। পাচনতন্ত্রে গলযোগ দেখা দেয়।
দাঁতের গোড়া থেকে নির্গত পুঁজ থেকে গলা, মুখ ও পড়ে ফুসফুসেও অন্য রোগ দেখা দিতে পারে। সহজ কথায়, পায়োরিয়া রোগ, শরীরের অন্যান্য রোগাক্রমনের পথ করে দেয়।
ঘরোয়া চিকিৎসা
(১) লেবুর রস মাড়িতে মালিশ করলে পায়োরিয়া রক্ত পড়া বন্ধ হয়।
(২) পিপুল বা বটের নরম বাকল বেঁটে জলে ফুটিয়ে সেই জলে কুলি করলে, গার্গল করলে পায়োরিয়া প্রশ্রমিত হয়।
(৩) গাওয়া ঘিএর সঙ্গে কর্পূর মিশিয়ে সকাল বিকাল দাঁতে মালিশ করলে পায়োরিয়া দাঁতের যন্ত্রনা কমে যাবে।
(৪) সরিষার তেলের সঙ্গে লবন মিশিয়ে দাঁত মাজলে পাওরিয়াতে উপকার পাওয়া যায়।
(৫) তিল তেল অনেক্ষন মুখে রেখে কুলি করলে পায়োরিয়া নির্মূল হয়। এতে দাঁত মজবুত হয়। নড়া দাঁতও বসে যায়।
(৬) পটলের পাতা, কচু, গোলমরিচ, পিপুল, ও সৈন্ধব লবন একসঙ্গে মিশিয়ে ফুটিয়ে পাচন তৈরি করে ছেঁকে নিতে হবে। ঠান্ডা হলে জল দিয়ে দুই বেলা কুলকুচি করতে হবে। একসপ্তাহের মধ্যেই পায়োরিয়া দূর হবে।
পায়োরিয়া রোগের পরামর্শ
(১) দাঁতকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখবেন।
(২) অত্যাধিক গরম অথবা অত্যন্ত ঠান্ডা যেমন, গরম দুধ, চা, কফি, বরফ, কুলফি, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়া ক্ষতিকর।
(৩) খুব গরম কিছু খেয়েসঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা খাওয়া কিংবা খুব ঠান্ডা কিছু খাওয়ার পরেই গরম কিছু খাওয়া, দাঁতের পক্ষে বিপজ্জনক।
( ৪) যেকোনো শক্ত খাবার দাঁত দিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে খেলে দাঁত মজবুত হয়। রোগাক্রান্ত হাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
(৫) সকালে ও দুপুরে স্নানের সময় দাঁতের গোড়া হালকা ভাবে মালিশ করবেন। এতে কোনো প্রকার জীবাণুর এক্রোমনের ভয় থাকবে না।
পেয়ারা পাতার ব্যবহার
দাঁতের যেকোনো সমস্যায় পেয়ারা পাতা অব্যর্থ। ব্যবহার জানা থাকলে সহজলভ্য বস্তুটি সকলেই ব্যবহার করতে পারে।
(১) গুটিকতক পেয়ারা পাতা জলে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে পাতা সেদ্ধ হয়েছে জলটা যখন ঘন হয়ে যাবে তখন নামিয়ে নিতে হবে। এটা হলো পেয়ারা পাতার কাথ। এটা দিয়ে বার বার কুলকুচি করলে দাঁত ব্যথা দাঁতের যন্ত্রনা নিবারণ হয়। দাঁত সুরক্ষিত থাকে।
দাঁতের যন্ত্রনা খুবই কষ্টদায়ক। যন্ত্রনা হতে থাকে কয়েকটি কচি পেয়ারা পাতা চিবোলে সঙ্গে সঙ্গে দাঁতের যন্ত্রনা কমে যাবে।