রক্তাল্পতা বা রক্তশূন্যতা রোগে নটে শাকের প্রয়োজনীয়তা

আমরা অনেকেই জানি যে, কাঁচা কলায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ লোহা আছে। তাছাড়া বহু প্রাচীনকাল থেকে রক্তশূন্যতা রোগে মোচা বা কাঁচকলা বেশি পরিমাণে খাওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। যদিও এই মোচা বা কাঁচকলা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়িয়ে দেয়। খনিজ লোহা সাধারণতঃ রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। সত্যিই কি কাঁচা কলা আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে রক্ত উৎপাদনে সক্ষম? এর পুষ্টি উপাদান বিশ্লেষণ করলেই এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।

কাঁচা কলায় লোহার পরিমাণ আছে ঠিকই, তবে পরিমাণে এমন কিছু বেশি নয়। বরং অন্যান্য সহজলভ্য খাদ্যবস্তুতে যেমন নোটে শাক, কচি নিমপাতা, ধনেপাতা, আখের গুড় এবং পালংশাকে অনেক বেশি পরিমাণে লোহা আছে।

নিচের তালিকায় পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে, যে কোন কোন খাদ্যবস্তু তে কত বেশি পরিমান লোহা আছে।

খাদ্যবস্তুর নাম লোহার পরিমাণ ( মিলিগ্রাম )

(1) নটে শাক – 25.5

(2) কচি নিম পাতা – 25.3

(3) ধনেপাতা – 18.5

(4) আখের গুড় – 11.4

(5) পালং শাক – 10.9

(6) কাঁচকলা – 6.27

উপরিউক্ত তালিকা থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে কাঁচকলায় লোহার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম আছে। রক্তে আয়রনের ঘাটতি তে অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচকলা খাওয়ার বিশেষ প্রয়োজন নেই। প্রতিদিন শরীরে যে সামান্য পরিমাণ লোহার প্রয়োজন হয় তা প্রতিদিনকার খাদ্য বস্তু থেকে পাওয়া যায়। শাক, ধনেপাতা বা নিমপাতা দৈনিক খাদ্য তালিকায় যুক্ত করলেই রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব।

এছাড়া নোটে শাক বা অন্যান্য শাক দৈনিক খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারলে যেমন হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি থেকে শরীরকে দূরে সরিয়ে রাখা যায়, তেমনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

পরিশেষে বলা যেতে পারে, নটে শাক যেমন শরীরের একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে, তেমনি আমাদের জীবনে সার্বিক খাদ্যাভ্যাস এমন হতে হবে যা সামগ্রিকভাবে আমাদের সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করবে।

 

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *