বৃক্কের (kidney ) রোগ ও ঘরোয়া চিকিৎসা

আজকাল অনেকের মুখেই শোনা যায়, অমুকের কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে, বাদ দিতে হবে। অনেকের দেখা যায়, একটি কিডনি অপারেশন করে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিডনি দান এর আবেদন করে খবরের কাগজে চিঠি প্রকাশিত হতেও চোখে পড়ে।

কিডনি বা বৃক্ক আসলে কি, তার কাজই বা কি অনেকেরই তা জানা না থাকায় উপযুক্ত সর্তকতা অবলম্বন করা সম্ভব হয় না।

আমাদের শরীরে কিডনি থাকে দুটি। থাকে শিরদাঁড়ার দুপাশে কোমরের ওপরে। রক্ত পরিষ্কারের কাজে কিডনি দুটি ছাঁকনির ভূমিকা পালন করে। রক্তের মধ্যে শরীরের পক্ষে হানিকর যেসব দূষিত পদার্থ থাকে সেগুলো কে আলাদা করে প্রস্রাবের মধ্য দিয়ে বের করে দেয়। শরীরের রক্ত প্রবাহ কিডনির মধ্য দিয়ে পরিস্রুত হয়ে বেরিয়ে যায়।

কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যঙ্গ। রক্ত পরিশ্রুত করা ছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিডনিকে করতে হয়। আমাদের শরীরের জলীয় পদার্থ কিডনিই নিয়ন্ত্রণ করে। একজন সুস্থ মানুষের শরীর থেকে কিডনি প্রতিদিন কমপক্ষে দু’লিটার প্রস্রাব বের করে দেয়। শরীরের বজ্র পদার্থ এই প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যায়। লোহিত রক্ত কণিকা তৈরিতে এবং লোহিত রক্তকোষ রক্তের প্রোটিন কে শরীরে ধরে রাখতে সাহায্য করে।

কিডনির মতো এমনি অসংখ্য যন্ত্র আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে প্রতিনিয়ত তাদের নির্দিষ্ট কাজ করে চলেছে। একটা সময় আসে, যখন বয়স বেড়ে যায়, তখন এই যন্ত্রগুলির ও কর্মক্ষমতা কমে আসে। এছাড়া আমাদের অযত্ন অবহেলা বা অতিরিক্ত চাপের ফলে শরীরের যন্ত্রগুলির কর্মক্ষমতা বিঘ্নিত হয় । আমরা প্রায় সময়ই তা খেয়াল রাখি না। এই বিকল অবস্থা যখন রোগের আকারে প্রকাশ পায় তখন আমরা সজাগ হই।

শরীরের বর্জ্য পদার্থ গুলি বের করে দেবার কাজে নিযুক্ত রয়েছে কিডনি, ফুসফুস, অন্ত্র ও ত্বক।

কিডনি বিকল হলে বা তার কর্মক্ষমতা হ্রাস পেলে শরীরের সবচেয়ে বেশি বজ্র পদার্থ বের হওয়ার কাজে সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর প্রভাব পড়ে সমস্ত শরীরে ম

ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করতে না পারলে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, শ্বাসনালী ঘটিত রোগ দেখা দেয়।

অনতরে সমস্যা হলে পাচনতন্ত্রের কাজে গোলযোগ দেখা দেয়। ফলে হজমের গোলমালে কষ্ট পেতে হয়।

ত্বক আমাদের দেহের সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব রক্ষার সহায়ক। ত্বকের কাজে বিঘ্ন উপস্থিত হলে শরীরে নানা রকম বিকার ও বিকৃতি দেখা দেয়।

দেখা যাচ্ছে শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার যন্ত্র গুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে। অথচ এই অত্যাবশ্যক যন্ত্রটির সম্পর্কে আমরা বেশি উদাসীন থাকি।

বৃক্কের প্রদাহ ঘরোয়া রোগ

বৃক্কের ব্যথা হলে কখনোই অবহেলা করবেন না। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

(১) খরমুজর এর খোসা রোদে শুকিয়ে চূর্ণ করে নিতে হবে। অথবা সামান্য জলে বেটে নেবেন।এই বাতা চূর্ণ সামান্য গরম করে বা গরম জলে মিশিয়ে সেবন করবেন।কিডনির ব্যথা কমে যাবে।

(২) গরমের মরসুমে টাটকা খরমুজ বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। খোসা ছেচে বা বেটে রোগীকে খাওয়াবেন। চমৎকার কাজ করবে।

উপকরণ : শুকনো তুলসী পাতা, যোয়ান,সৈন্ধব লবণ।

ছায়ায় শুকনো তুলসী পাতা ২০ গ্রাম,যোযান ২0 গ্রাম, সৈন্ধব লবণ১0 গ্রাম তিনটি একসঙ্গে মিহি করে বেটে নেবেন। এই চূর্ণ প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় এক চামচ করে হালকা গরম জলে মিশিয়ে সেবন করতে দেবেন।

এই ওষুধ কিডনির ব্যথা সঙ্গে সঙ্গে কমিয়ে দেবে। রোগীর কষ্ট দূর হবে। সমমাত্রায় দুই থেকে তিনদিন সেবন করলে কিডনির ব্যথা দূর হবে।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *