দারুচিনি -এর ৮টি ঘরোয়া টোটকা

পরিচিতি : দারুচিনি ঝোপঝাড় বিশিষ্ট মাঝারি ধরণের গাছ। অনেকটা গলাপ জামের গাছের মতো। গাছের ছাল ধূসর বর্ণের খসখসে, এর কাথ ফিকে লাল বর্ণের এবং বেশী শক্ত নয়। পাতা প্রায় তেজপাতার মতো জা ডালের বিপরীত দিকে হয়। দারুচিনি পূর্বে জাভা, সুমাত্রা, চিন প্রভৃতি অঞ্চল থেকে আসতো বলেই এর নাম দেওয়া হয়েছে দারুচিনি। সম্ভবত শ্রীলংকা এর আদি আবাসভূমি। পাতা চর্মবৎ, সুক্ষ লোমযুক্ত, উপরিভাগ উজ্জ্বল এবং ২-৫ টি শিরাবিশিষ্ট। কচি পাতা গোলাপি – লাল রং বিশিষ্ট। মার্চ – এপ্রিল মাসে ফুল ও ফল হয়।

 

ব্যবহার্য অংশ : গাছের বাকল বা ছাল।

কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়

(১) কণ্ঠস্বরের বিকৃতিতে ১ গ্রাম দারুচিনি চূর্ণ আধকাপ গরম জলে রাত্রে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সেটাকে ছেঁকে নিয়ে সেই জলটা খেতে হবে। এটা কন্ঠস্বরকে স্বাভাবিক করে দেয়।

(২) গলার ক্ষতে ১ গ্রাম দারুচিনির চূর্ণ এক কাপ গরম জলে ভিজিয়ে রেখে, পরেরদিন সেটাকে ছেঁকে সকালে ও বিকালে দূবেলায় অল্প অল্প করে খেতে হবে।এর দ্বারা সাধারণত গলক্ষতের উপশম হয়।

(৩) মাথার যন্ত্রণায় দারুচিনি চূর্ণ সিকি গ্রাম মাত্রায় সকালে ও বিকালে দিকে দুর্বার জলসহ খেতে হবে আর তাকে খুব মিহাই করে চূর্ণ করে এক থেকে দু’বার নস্যি নিতে হবে। এর দ্বারা নাসাস্রোত পরিষ্কার হবে এবং মাথার যন্ত্রণার উপশম হবে।

(৪) দেহের বর্ণের উজ্জ্বাল্য হীনতায় দারুচিনি একবার ভালোভাবে থেঁতো করে এক কাপ গরম জলে ভিজিয়ে রেখে পরের দিন সকালে কিছু খাওয়ার পর সেটাকে ছেঁকে খেতে হবে। এছাড়া এক মুঠো দুর্বা ঘাস, এক গাট কাঁচা হলুদ, ও দু গ্রাম দারু চিনি একসঙ্গে বেটে স্নানের ঘন্টাখানেক পূর্বের লোকে যেমন তেল হলুদ মাখে তেমনি মাখতে হবে।

(৫) মেচেতায় দারুচিনির গুঁড়ো এক বা দেড় গ্রাম আগের দিন রাত্রে গরম জলে ভিজিয়ে রেখে, পরের দিন সেটাকে ছেঁকে নিয়ে সকালে বিকালে দুবার ওই জল খেতে হবে। আর দুই বা এক টিপ নস্যির পরিমাণ দারুচিনির গুঁড়ো দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ওই মেছতায় উপরে আস্তে আস্তে ঘষে দিতে হবে। এতে ওই দাগ মিলিয়ে যাবে।

(৬) দাঁত ও একজিমায় দারুচিনি ৩গ্রাম মাত্রায় নিয়ে, থেঁতো করে দু কাপ জলে সেদ্ধ করে, এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে, কিছু খাওয়ার পর সেই কাথটা দুবেলা খেতে হবে। এর সঙ্গে দুই থেকে তিন গ্রাম দারু চিনি বেটে অল্প একটু দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যথার স্থানে লাগাতে হবে। এটা একদিন অন্তর লাগানো উচিত।

(৭) টিউমারের দারুচিনি ১ গ্রাম একটু থেঁতো করে তিন কাপ জল সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ওই কাথটা দুবেলা খেতে হবে। এর দ্বারা ওই সব রোগের যেসব উপসর্গ উপস্থিত হয় তার কিছুটা উপশম হবে।

(৮) কৃমিতে দারুচিনি চূর্ণ সিকি গ্রাম মাত্রায় জলসহ কয়েকদিন বিকালের দিকে বা সকালের দিকে খেলে গুঁড়ো কৃমি থেকে রেহাই পাওয়া যাবে, তবে শিশুদের ক্ষেত্রে মাত্রা অর্ধেক।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *