ঘৃতকুমারীর অনবদ্য কিছু উপকারিতা

পরিচিত : ঘৃতকুমারী বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। গাছ ১থেকে ২ ফুট উঁচু হয়। পাতা পুরু এবং নিচের দিক আংশিক বৃত্তাকার। উপরের দিক সমান এবং পুরু পাতার দু ধার করাতের মতো কাঁটা। পাতার ভিতরের মাংসল শাঁস পিচ্ছিল লালার মতো উৎকট গন্ধযুক্ত ও তিতা স্বাদের পুস্প দন্ড লম্বা লাঠির ন্যায় সরু মাথায় লেবু বর্ণের ফুল হয়। শীতের শেষে ঘৃতকুমারী ফুল ও ফল হয়। ঘৃতকুমারী ডাটা, ছাল এবং পাতার মাংসল পিচ্ছিল অংশ ও শুষ্ক রস ব্যবহার করা হয়। ঘৃতকুমারীর অন্য এক প্রজাতির নাম ঘৃতকাঞ্চন যার বোটানিক্যাল নাম – Aloe barbadensis Mill। ঘৃতকুমারী ঘৃতকাঞ্চন অপেক্ষা বেশী সবুজ এবং এর কাঁটার সংখ্যা বেশী। তবে এদের ঔষধি গুনাগুন একই।

ব্যবহার্য অংশ : পাতার ভিতরের মজ্জা বা রসালো পিচ্ছিল পদার্থ

কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়

(১) পুরে গেলে ঘৃতকুমারীর শাঁস প্রলেপ দিলে জ্বালা উপশম হয় এবং বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।

(২) চর্মরোগে এক তলা পরিমান প্রলেপ দিলে চর্মরোগ ভালো হয়।

(৩) প্লিহ্যা হলে এক তোলা পরিমান প্রলেপ দিলে চর্মরোগ ভালো হয়।

(৪) মাথা ঠান্ডা রাখার জন্য ঘৃতকুমারীর পাতার নির্যাস মাথায় ব্যবহার করলে মাথা ঠান্ডা থাকে।

(৫) প্রস্রাবর সময় কোথ দিলে শুক্রমেহ হলে ঘৃতকুমারীর ৫ গ্রাম শাঁসের এর সাথে একটু চিনি মিশিয়ে খেলে ওই ক্ষরণ বন্ধ হয়।

(৬) কোন কোন মহিলার মাসের মধ্যে ২-৩ দিন স্তনে ব্যথা এমনকে কোমরেও ব্যথা হয় অথচ ঋতু হয় না। এক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর শাঁস চটকে তরল করে আমসত্বের মতো রোদে শুকিয়ে এর ২-৩ গ্রাম গরম জলে ভিজিয়ে দিনে দু বার করে খেলে মাসিক স্বাভাবিক হয়।

(৭) সদ্য প্রসূত শিশুর যদি এক মাসের মধ্যে পেট ফাঁপা, স্তন্য পানে অনিচ্ছা এর সঙ্গে কান্না থাকে, ই ক্ষেত্রে ঘৃতকুমারীর এক ফোঁটা রস মধুর সাথে মিশিয়ে জিভে লাগিয়ে দিলে মলত্যাগ হবে এবং পেটের বায়ুও কমে যাবে।

(৮) কৃমির উপদ্রব দেখা দিলে ঘৃতকুমারীর শাঁস ৫ গ্রাম করে দুবেলা দিতে হবে।

(৯) অর্শ রোগে এর ৫- ৭ গ্রাম শাঁস একটু ঘি মিশিয়ে সকাল বিকাল দু বার খেলে দাস্ত পরিষ্কার হয় এবং অর্শের ও উপকার হয়।

(১০) কোন ব্রনের ক্ষত কোন ভাবেই না সারলে ছাতিমের আঠা শুকিয়ে গুঁড়ো কোনো ক্ষতের উপর ছিটিয়ে দিলে সেরে যাবে।

(১১) দাঁতের যন্ত্রনায় আক্রান্ত দাঁতে ছাতিমের আঠা দিলে উপকার পাওয়া যায়।

(১২) মাঝে মাঝে জ্বর হয়। মুখে অরুচি, দাস্ত পরিষ্কার হয় না, আস্তে আস্তে চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে এরূপ ক্ষেত্রে ১0- ১২ গ্রাম ছাতিম ছাল ৩ কাপ জলে সিদ্ধ করে জল সমান চার ভাগে ভাগ করে সকালে ও বিকালে খেলে ২-১ দিনের মধ্যেই জ্বর সেরে যায়।

(১৩ ) বাকলের নির্যাস উচ্চরক্তচাপ ও ক্যান্সারের ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

(১৪) ছাতিম গাছের ছাল সিদ্ধ করে যে নির্যাস তৈরী কড়া হয়, ম্যালেরিয়া রোগের জন্য তা খুবই ভালো ঔষধ। কুইনাইনের বদলেও ব্যবহার কড়া যেতে পারেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *