পরিচিতি : অর্জুন বৃহদাকৃতির পত্রঝরা বৃক্ষ। কান্ড দীর্ঘ, সরল, উন্নত, মসৃণ ও আকর্ষণীয়। এটি সাধারণত 40 থেকে 80 ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। বাকল ম্লান ধূসর ও পুরু। অর্জুনের ছাল সহজেই চেছে তোলা যায়। পাতা 4 থেকে 8 ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। ফুল অত্যন্ত ছোট, ম্লান হলুদ ও উগ্র গন্ধ যুক্ত। গেছে অজস্র শক্ত ফল হয়। ফল দেখতে অনেকটা কামরাঙ্গার মতো কিন্তু আকৃতিতে অপেক্ষাকৃত ছোট। ভারত, শ্রীলংকা ও বাংলাদেশ অর্জুনের আদি নিবাস।
ব্যবহার্য অংশ :প্রধানত: ছাল, তবে ক্ষেত্র বিশেষে পাতা ও ফল ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয় :
(১) যাদের বুক ধড়ফড় করে অথচ উচ্চ রক্তচাপ নেই, তাদের পক্ষে অর্জুন ছাল কাঁচা হলে 10-12 গ্রাম, শুকনো হলে 5-6 গ্রাম একটু ছেচে 250 মি.লি দুধ ও 500 মি . লি জলের সাথে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে আনুমানিক 125 মি. লি থাকতে ছেঁকে বিকাল বেলা খেলে বুক ধড়ফড়ানি কমে যায়। তবে পেটে যেন বায়ু না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। লো ব্লাড প্রেসারে একই নিয়মে তৈরি করে খেলে ব্লাড প্রেসার বেড়ে স্বাভাবিক হয়।
(২) অর্জুনের ছাল বেটে খেলে হৃদপিন্ডের পেশী শক্তিশালী হয় এবং হূদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে ।
(৩) অর্জুনের ফলের গুঁড়া রক্তচাপ কমায়, মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে এবং লিভার সিরোসিসে টনিক হিসেবে কাজ করে।
(৪) অর্জুনের ছাল মুখ, জ্বিহা ও মাড়ির ঘা এর চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি মাড়ির রক্তপাত বন্ধ করে।
(৫) অর্জুনের ছাল হাঁপানি, আমাশয়,ঋতুস্রাবজনিত সমস্যা, ব্যথা ইত্যাদি চিকিৎসায়ও উপকারী।
(৬) অর্জুনের ছাল জ্বর নিবারক হিসেবে কাজ করে।
(৭) এছাড়া চর্ম ও যৌন রোগে অর্জুন ব্যবহৃত হয়। যৌন উদ্দীপনা বাড়াতে ও অর্জুন ছালের রস সাহায্য করে।
(৮) শরীরের ক্ষত, খোস-পাঁচড়া দেখা দিলে অর্জুনের ছাল বেটে লাগালে ভালো ফল পাওয়া যায়।
(৯) অর্জুন খাদ্য হজম ক্ষমতা বাড়ায়, খাদ্যতন্ত্রের ক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
(১0) অর্জুন ছাল রক্ত পরিষ্কারক।