শরীরের ওজন বৃদ্ধির জন্য কি করবেন?

খেজুরের দুধ

(১) একটি মাটির বা কাঁচের পাত্রে দুটি খেজুর সামান্য জলে ভিজিয়ে রাখবেন।সকালে বিচি ছাড়িয়ে ফেলে দিয়ে খেজুর দুটি ২৫০  গ্রাম দুধের সেদ্ধ করবেন। দুধ ফুটে ২০০ গ্রাম মত হলে নামিয়ে খেজুর চটকে দুধসহ খেতে হবে। এইভাবে এক সপ্তাহ খেলে অল্পদিনেই শরীরের দুর্বলতা কেটে গিয়ে বল বৃদ্ধি হবে। খেজুরের দুধ ক্ষুধা ও হজম শক্তি বর্ধক।

(২) কয়েকটি খেজুরের বিচি বের করে নিয়ে জলে ধুয়ে ২৫০  গ্রাম দুধে দিয়ে হালকা আঁচে ফুটতে দেবেন। ১০ থেকে ১২ মিনিট ফোটার পর খেজুরগুলো গুলে যাবে।তখন নামিয়ে নিয়ে খেজুর চিবিয়ে খেয়ে নেবেন, পরে দুধ পান করতে হবে।এই খেজুর দুধ একটি শক্তি বর্ধক টনিক।এতে দ্রুত শরীরের ওজন ও বল বৃদ্ধি হবে।

খেজুর ও ঘি

কয়েকটি খেজুরের বিচী বের করে পরিষ্কার করে কাচের পাত্রে তুলে রাখবেন। এই খেজুর একটি একটি করে প্রতিদিন সামান্য ঘি এবং কয়েকদানা গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে খেতে হবে। এতে আশাতীত ফল পাওয়া যাবে। বয়স অনুসারে এক থেকে চারটি খেজুর কয়েক সপ্তাহ খেতে হবে তবে শীতের সময় খাওয়াই বাঞ্ছনীয়।

যবের পায়েস

কিছু পরিমাণে যব নিয়ে জলে ভিজিয়ে আধভাঙা করে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে।এই খোসা ছাড়ানোর যব ৫০  গ্রাম পরিমাণ নিয়ে সমপরিমাণ দুধের পায়েস তৈরি করুন। এই পায়েস দুমাস নিয়মিত খেলে দ্রুত শরীরে মাংস বৃদ্ধি হবে, ওজন বাড়বে। দুর্বল রোগা ব্যক্তি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হবেন। এই পায়েস প্রতিদিন খেতে ভালো না লাগলেও একদিন বা দুদিন অন্তর খেতে হবে ।

বল ও স্ফূর্তি বৃদ্ধির জন্য

ছোলা ২৫ গ্রাম পরিমাণ নিয়ে ভালো করে পরিস্কার করে পোকা লাগা ও অস্পুষ্ট ছোলা বেছে ফেলে দেবেন।সন্ধ্যাবেলা এই ছোলা একগ্লাস জলে ভিজিয়ে দিন।সকালে শৌচাদি কর্মের পরে ও ব্যায়ামাদি করার পরে ভেজানো ছোলা ভালো করে চিবিয়ে খেলে ছোলার জলটা ও পান করতে হবে।এই জলে এক চামচ মধু মিশিয়ে নিতে পারলে ফল দ্রুত পাওয়া যাবে।অথবা ছোলা খাওয়ার পর আধ গ্লাস দুধ পান করতে হবে।এতে শরীরে বল বৃদ্ধি হবে,বীর্য পুষ্ট হবে।

অঙ্কুরিত ছোলা

ছোলা অঙ্কুরিত হলে তার উপকারী ক্ষমতাও অনেকবৃদ্ধি পায়।অঙ্কুরিত ছোলা শরীরের মাংসপেশি কে সবল ও সুদৃঢ় করে।এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন A থাকায় দ্রুত ওজন বাড়ায়,রক্ত বৃদ্ধি করে।নিয়মিত সেবনে চর্ম রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে।

ছোলাকে অঙ্কুরিত করবেন কি করে?ছোলা বাছাই ও পরিষ্কার করে একটি পাত্রে জলে ভিজিয়ে দেবেন।পাত্রে জল এমনভাবে দেবেন যাতে জল ছোলার গায়ে গায়ে লেগে থাকে, ছোলার সমতা ছাপিয়ে না যায়।কয়েকদিন ভেজালে জ্লের মাত্রা ঠিক হয়ে যাবে।

সকালে ভেজানো ছোলা রাতে একটা মোটা ভেজা কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখবেন। পরের দিনই ছোলাতে অঙ্কুর গজিয়ে যাবে।অংকুর গজাবার জন্য গরমকালে ১২ ঘন্টা সময় দরকার হয়।শীতকালে এই সময়টা আরো বেশি লাগবে। মোটকথা অঙ্কুর না গজানো পর্যন্ত ছোলা কিভাবে কাপড় বাঁধা অবস্থায় ঝুলিয়ে রাখবেন এবং কাপড়ের গায়ে বারকয়েক জলের ছিটা দিতে হবে।

অনেক অঙ্কুরিত ছোলা কে মুখোরোচক করার জন্য গোলমরিচের গুড়ো, সৈন্ধব লবণ, আদা কুচি এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে খেয়ে থাকেন। অনেকে আখের গুড় সহযোগে খান। কিছু না মিশিয়ে ভিজানো বা অঙ্কুরিত ছোলা খাওয়া বিধেয়।

শিশুদের জন্য

শিশুদের জন্য আদর্শ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার হলো নারকেল -খেজুর মিছিরির যোগ।বয়স অনুসারে খেজুর ৩ থেকে ৫ টি আটি বের করে বাদ দিয়ে পরিষ্কার করে নেবেন, শুকনো নারকেলের শাঁস নেবেন খেজুরের দ্বিগুণ,এবং মিছরি ওই পরিমাণে।সবকটি আলাদা আলাদা ছোট ছোট টুকরো করে একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে শিশুদের জল খাবারের সঙ্গে খেতে দেবেন।বিশেষ করে শীতকালে এটি খেতে দেবেন।খাওয়ার পরপরই জল খেতে দেবেন না।

এতে পাচন শক্তি বাড়ে।সর্দির ধাত থাকলে কমে যাবে। ঘন সর্দি লাগবে না। দাঁত ভালো থাকে। টনসিল নিরাপদে থাকে। সবথেকে বড় কথা এটি শিশুর পুষ্টি বৃদ্ধির সহায়ক।

বৃদ্ধদের পুষ্টিকর আহার

(১) প্রতিদিন সকালের দু-তিনটি শুকনো ডুমুর পরিষ্কার করে চিবিয়ে খেতে হবে।পরে মিছরি মেশানো এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। এভাবে নিয়মিত একমাস ডুমুর ও দুধ খেলে বৃদ্ধদের দুর্বল শরীর সবল হবে। বয়স জনিত অবসন্নতা, ঘুম ঘুম ভাব ইত্যাদি দূর হবে।

শুকনো ডুমুর দাঁতে চিবিয়ে খাওয়ার অসুবিধা হলে রাতে ডুমুর গায়ে গায়ে জল রেখে একটি পাত্রে ভিজিয়ে দেবেন।জল শোষণ করে সকালে ডুমুর গুলো ফুলে মোটা ও টাটকা ডুমুররের মতো নরম হয়ে যাবে।

(২) এভাবে কয়েকটি ডুমুর রাত্রে ভিজিয়ে সকালে এবং সকালে ভিজিয়ে রাত্রে খেলে যে কোন ধরনের অর্শ এক মাসের মধ্যে নিরাময় হবে।

জলখাবারের সঙ্গে দু-তিনটি ডুমুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

(৩) রাতে জলে ভেজানো চার-পাঁচটি বাদাম,দুটি আখরোটের শাঁস, বিচী ছাড়ানো ৫-৭ টি মনাক্কা প্রতিদিন সকালে ভালো করে চিবিয়ে খেতে হবে।পরে মিছরি মিশিয়ে এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। চিবিয়ে খেতে অসুবিধা হলে আখরোট, বাদাম,মনাক্কা কেটে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।

এই যোগ নিয়মিত পান করলে বৃদ্ধদের শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হয়,মনে ফুর্তি আসে। শীতের সময় এটি তিন মাস

নিয়মিত খেতে পারলে বৃদ্ধদের শরীরে যুবক সুলভ শক্তি ও উদ্দীপনা বাড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *