গোলমরিচ এর ১০ টি অতি প্রয়োজনীয় ভেষজ গুন

গোলনারিচ ঔষধিগুনে ভরপুর। এটি কাশি, পেট ব্যথা, অম্বল গ্যাস, হাজমে গোলমাল, চার্মরোগ, ফোঁড়া ইত্যাদি রোগে সরাসরি ব্যবহার করা হয়। অনুপান হিসাবেও গোলমরিচের ব্যবহার হয়। এটি বাত কফনাশক, পিত্তকারক।

রোগে – ভোগে গোলমরিচের ব্যবহার :

স্বরভঙ্গ : গোলমরিচ চূর্ণ ঘি ও মিছরির সঙ্গে চেটে খেলে গলার স্বর স্বাভাবিক হবে। ১০ টা গোলমরিচ জোকে ফুটিয়ে ওই জল দিয়ে গার্গল করলেও গলা বসা ভালো হবে, গলার সংক্রমণ নষ্ট হবে।

কাশি : গোলমরিচ চূর্ণ ও আধ চামচ করে নিয়ে এক সঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিনবার চেটে খেতে দিবেন। কাশি কমে যাবে।

গ্যাস : এককাপ জলে আধ চামচ গোলমরিচ চূর্ণ, আধ চামচ বিট লবন ও আধ খানা লেবুর রস মিশিয়ে কয়েকদিন নিয়মিত সেবন করলে গ্যাস অম্বল নষ্ট হয়।

সর্দি : তরল সর্দিতে দুধের সঙ্গে গোলমরিচ মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। নাক দিয়ে জল ঝরা জ্বর জ্বর ভাব দূর হবে।

ঘন ঘন সর্দি লাগলে এবং বার বার হাঁচি হতে থাকলে বা গায়ে হাল্কা জ্বর থাকলে পাঁচটি গোলমরিচ, ১০ টি তুলসীপাতা, কয়েকটি লবঙ্গ, কিছুটা আদার কুচি ও একটা এলাচ একসঙ্গে ফুটিয়ে এতে এক চামচ মধু দিয়ে দিনে তিনবার চায়ের মতো গরম গরম পান করতে হবে। ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যাবে এবং সর্দির অস্বস্তি দূর হবে।

হাজমে গোলমাল : একটা লেবু দু আধখানা করে কেটে তাতে গোলমরিচ চূর্ণ ও বিট লবণের গুঁড়ো ছাড়িয়ে আগুনে গরিম করে চুষে খেতে হবে, বাদ হাজমের সমস্যা দূর হবে।

আমাশয় : গোলমরিচ চূর্ণ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে চেটে খেতে হবে। পড়ে এক গ্লাস পরামর্শ দেবেন। দিনে তিনবার। এতে নতুন বা পুরানো আমাশয় ভালো হবে।

জ্বর : ১০ টি গোলমরিচ চূর্ণ করে ৩00 জলে ফোটাতে হলে চার ভাগের এক ভাগ হলে তাতে ১০ গ্রাম চিনি বা মিছরি গুঁড়ো মিশিয়ে সেবন করতে হবে। এতে সাধারণ জ্বর ভালো হবে।

মাড়ি ফোলা : গোলমরিচ ফোটানো জলে কুলি করলে মাড়ি ফোলা কমবে। ব্যথা দূর হবে।

কলেরা : প্রথমে একমাত্র হিং ও দুই মাত্রা কর্পূর মিশিয়ে নিবেন। এর সঙ্গে পড়ে একমাত্র গোলমরিচ চূর্ণ মিশিয়ে মত ১৬ টি গুলি তৈরি করতে হবে। কলেরা রোগীকে অন্তর একটি করে গুলি দুই ঢোক জলের সঙ্গে খাওয়াবেন। কয়েক ঘন্টার মধ্যেই রোগীকে বমি দাস্ত কমে যাবে।

পেট ব্যথা : একমাত্র গোলমরিচ চুর্ণের সঙ্গে আদা ও লেবু রস মিশিয়ে সেবন করলে পেটের ব্যথা প্রশামিত হবে।

চার্মরোগ : দাদ, ফোঁড়া, চুলকানিতে ইত্যাদি সমস্যায় গোলমরিচ ঘীয়ে পিষে লেপন করতে হবে। ফোঁড়ার প্রথম অবস্থায় এই ২-৩ বার ব্যবহার করলে ফোঁড়া বসে যাবে।

দৃষ্টিক্ষিনতা : আধ চামচ গোলমরিচ গুঁড়ো, আধ চামচ ঘি ও আধ চামচ মিছরি গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে চেটে খেতে দিবেন। এতে দৃষ্টি ক্ষীণতা দূর হবে। চোখের জ্যোতি বাড়বে।

ম্যালেরিয়া : তুলসী ও মধু সহযোগে গোলমরিচ চূর্ণ সেবন করলে ম্যালেরিয়াতে উপকার পাবেন।

প্রসবান্তে দুর্বলতা : সন্তান প্রবের পর প্রসূতিকে ভাতে ঘি ও গোলমরিচ গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়ালে শরীর দ্রুত সুস্থ সবল হয়ে উঠবে।

রাতকানা রোগ : গোলমরিচ চূর্ণ দই বা মধুর সঙ্গে মেড়ে চোখে কাজলের মতো লাগলে রাতকানা রোগ ভালো হবে।

নাক দিয়ে রক্ত পড়া : গোলমরিচ গুঁড়ো পুরানো গুড় ও দুই সহযোগে সেবন করলে নাসা রোগ অর্থাৎ নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি : আগে ১০ – ১৫ টি ব্রাম্হী শাকের পাতা সামান্য ঘি য়ে ঢেলে জল দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। তার পর এই জলে গোলমরিচ গুঁড়ো ও সামান্য চিনি মিশিয়ে সেবন করতে হবে। এতে স্মৃতিশক্তি বাড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *