রসুন কে বলা হয় সর্বরোগের ভেষজ। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে সর্বত্র রসুনের গুনাগুনের উচ্চ প্রসংসা করা হয়েছে। বহু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রোগের প্রতিকারের জন্য রসুনের ব্যাবহার প্রচলিত। রসুন বহু রোগের প্রতিষেধক হিসাবেও কাজ করে।
রসুনের গন্ধ খুব উগ্র হাওয়ায় তা অনেকেই তা সহয্য করতে পারে না। কিন্তু তার অসাধারণ গুনের কথা স্মরণে রেখে, রান্নার সঙ্গে মশলা হিসাবে তারা রসুন ব্যবহার করে থাকেন।
রসুনের আশ্চর্য গুন হল রান্নার পরেও তার উপকারিতা বিন্দুমাত্র কমে যায় না। তবে কাঁচা অবস্থাতেই রসুন ব্যবহার করা উচিত।কাঁচা রসুনের ঝাঁঝালো গন্ধ ও বায়ুবাহিত অনেক মন্দ প্রভাব নষ্ট করে।
রোগ ভোগে রসুনের ব্যাবহার ও ঘরোয়া নিরাময়
আজীর্ণ ও পেটব্যথা (Indigestion and abdominal pain): রসুন, সৈন্ধব লবন ও চিনি সমমাত্রায় নেয়া বেটে তাতে ঘি মিশিয়ে চাটনির মতো খেলে আজীর্ণ, ক্ষুদামন্দা, পেটব্যথা, ইত্যাদি উদর সম্পর্কিত রোগ প্রশামিত হয়।
বাতবিকার (Arthritis): প্রতিদিন রাত্রে পাঁচটি করে রসুনের কোয়া জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সকালে রসুন থেঁতো করে করে জলটা পান করতে হবে। রসুনের মাত্রা বাড়িয়ে পর ঐর তিন সপ্তাহ খেতে হবে।
কানের ব্যথা(Earache) : কান পাকলে বা কানে কটকট ব্যথা হলে রসুনের তেল ব্যবহার করতে হয়। রসুন তেল ফোটাতে হবে। ওই তেল দু ফোটা করে কানে দিলে কানের ব্যথা বা পাকা ঘা ভালো হবে।
ক্ষয় রোগ (tuberculosis):ক্ষয় রোগে বা যক্ষা রোগে রোগে রসুন অত্যান্ত ফালাপ্রাদা। রসুনের রস ও অভূসার পাতার রস দু চামচ করে গাওয়া ঘি বা গরুর দুধ সঙ্গে মিশিয়ে সকালে বিকালে সেবন করলে ক্ষয় রোগের প্রকোপ প্রশামিত হয়।
কলেরা :বিচী ছাড়ানো শুকনো লংকা লাল, কাঁচা হিং, রসুন ও কর্পূর, মাত্রা হিসাব করে নেয়া একসঙ্গে লেবুর রস সহযোগে থক থকে করে বেটে নিতে হবে। সমস্ত বাটা দেয়া বড়ির মতো করে আধ হগন্ত অন্তর একটি করে বড়ি কলেরা রোগীকে খাওয়াতে হবে।
মাথা ব্যথা (Hedache):রসুনের খোয়া থেঁতো করে বা বাটে কানপাটিতে লেপন করলে আধকপালি, মাথা ব্যথা ভালো হবে। রসুনের রাস নাক দেয়া টানলেও মাথা ব্যথা প্রশামিত হয়।
উচ্চ রক্তচাপ (High blood pressure):রসুন হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চরক্তচাপ রোগে একটি অব্যর্থ যোগ। রসুন বাটে দুধের সঙ্গে খেতে হবে।
রাসু., ধনে, জিরা,গোল মরিচ, পুঁদিনা, ও সৈন্ধব লবন মিশিয়ে চাটনি করে খেলেও রক্তচাপ প্রশামিত হয়। দুধ সহযোগে রসুন খেলে সর্দি, ঠান্ডা লাগা, ইত্যাদি দূর হয়।