পিত্তে পাথুরি হলে ঘরোয়া চিকিৎসায় দূর করুন

পিত্ত পাথরি হলে কি করে বুঝবেন?

(১) পিত্ত পাথরের সূত্রপাত হলে আহারের পর রোগীর পিত্তাশয়ের কাছে অস্বস্তিবোধ হতে থাকে।

(২) নাভির ডান দিকে এবং নিচের দিকে অর্থাৎ পিত্তাশয়ের আশে পাশে ব্যথা অনুভূত হয়। তবে সব সময় ব্যথার অনুভব থাকেনা।কিছু খাওয়ার পর ব্যথা বেশ অনুভব হতে থাকে। ব্যথার সঙ্গে অনেক সময় গা গুলিয়ে বমি হয়। বমি হলে একটু স্বস্তি বোধ হয়।

(৩) যথাসময়ে সচেতন না হলে বা চিকিৎসার ব্যবস্থা না হলে রোগীর খাওয়ার অরুচি বেড়ে যায়, ব্যথা বাড়ে। পাথর বেড়ে গেলে বা বড় হলে সম্পূর্ণ পেটেই ব্যথা অনুভব হয়।ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে পিঠ থেকে ডান কাঁধের কাছ পর্যন্ত। টান ধরার মতো ব্যথা হতে থাকে।

(৪) পিত্ত নালীতে পাথর আটকে থাকলে অনেক সময় তীব্র জ্বর হয়, গা গোলাতে থাকে। মাথা ঘোরে।

কেন ও কিভাবে হয়?

পাথর হয় বৃক্ক বা পিত্তাশয়ে। আহারের অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা হোটেলে শরীরে বাত- পিত্ত -কফের আধিক্য দেখা দেয়। এর ফলে পাচন ক্রিয়া ও পাচক রস নিঃসরণ প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়। এটে শরীরে দূষিত পদার্থ যথাযথভাবে প্রস্রাবের সঙ্গে নির্গত না হয়ে বৃক্ক বা পিত্তাশয়ে জমা হয়ে ক্রমে পাথর বা পিত্তের আকার ধারণ করে।

কাজেই এ রোগ থেকে নিরাপদ থাকতে হলে যথেচ্ছ আহার- বিহার, পথ্য – অপথ্য সম্পর্কে সচেতন ও সতর্ক থাকা উচিত।

পিত্তপাথুরী চিকিৎসায় যোগ -প্রাকৃতিক চিকিৎসা

ভোরে সহজ বস্তিক্রিয়া এবং সেই অনুযায়ী আসন মুদ্রা অভ্যাস করা। সহজ প্রাণায়াম ১ নম্বর,৭ নম্বর,৯ নম্বর এবং ভ্রমণ-প্রাণায়াম, দুপুরে টাব- বাথ সন্ধ্যায়: ভ্রমণ প্রাণায়াম, সর্বাঙ্গাসন, উষ্ট্রাসন,

খাদ্যাভ্যাস

(১) রোগের লক্ষণ শুরু হলে মাছ, মাংস ও ডিম প্রভৃতি আমিষ জাতীয় খাবার বর্জন করা, রোগের প্রবনতার সময় ব্যথা অসহনীয় হয়ে ওঠে তখন সম্পূর্ণ উপবাস করা। এই উপবাসের সময় প্রচুর পরিমাণে লেবুর রস সহ জল পান করা। দেহের অম্ল বিষ নষ্ট করবার বিশেষ ক্ষমতা লেবুর রসের আছে।

(২) দেখা সম্পূর্ন না কমলে উপবাস থাকতে বেশ কিছুদিন। তারপর অর্ধ উপবাস অভ্যাস করা।এই অর্ধ উপবাসের সময় মাখন,দুধ, ঘোল, শাক সবজির ঝোল এবং ফলাদির রস খাওয়ার অভ্যাস করা। খুব বমির ভাব হলে একটানা ভিজে গামছা পাকস্থলী দিয়ে অল্প অল্প ঠান্ডা জল দেওয়া অথবা ওই ভিজে গামছার উপর একটি বরফ থলি রাখা।

(৩) এছাড়া কমলা, আনারস, আঙ্গুর, আপেল, বেদানা, পাকা আম, পাকা বা কাঁচা বেলের সরবত প্রভৃতি থেকে নিজের পছন্দ মতো খাবার নির্বাচন করা। ভোরে ক্ষিদে পেলে এক গ্লাস লেবুর সরবত বা দু -একটি কমলা ছাড়া অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করা অনুচিত। দুপুরে পরিমিত আকারে শাকসবজি গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

পরিশেষে বলা যায়, এই ধরনের সম্বন্ধিত চিকিৎসা পিত্তপাথুরী জনিত সমস্যায় বিশেষ ভূমিকা রাখে। কারণ মানসিক দুশ্চিন্তা হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, মনকেও যথেষ্ট শান্ত রাখতে হয়।

 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *