পরিচিতি : আকন্দ মাঝারি ধরনের ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ। 5 থেকে 7 ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছের ছাল ধূসর বর্ণের এবং কান্ড শক্ত ও কচি ডাল লোম যুক্ত। পাতা 4 থেকে 8 ইঞ্চি লম্বা উপরিভাগ মসৃণ ও নিচের দিকে তুলোর ন্যায় লোম আচ্ছাদিত সাদা সবুজাভ। ক্ষুদ্র বৃন্ত এবং বৃন্তদেশ হৃদপিন্ড আকৃতির। গাছের পাতা ও শাখা ভাঙলে দুধের মত সাদা আঠা বের হয়। পুষ্পদন্ড বহুশাখাবিশিষ্ট অনেকগুলো সাদা বা বেগুনি বর্ণের ফুল হয়। ফল ডিম্বাকৃতির ও টিয়া পাখির ঠোঁটের মতো বাঁকা, 3 থেকে 4 ইঞ্চি লম্বা হয়। বীজ ছোট ডিম্বাকৃতি পশম যুক্ত। ফল পাকলে ফেটে যায় এবং তুলা ও বীজ বাতাসে উড়ে স্থানান্তরিত হয়। বছরের প্রায় সবসময় ফুল দেখা যায়, তবে প্রকৃত সময় ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাস এবং মে ও জুন মাসে ফল হয়।
ব্যবহার্য অংশ: ফুল, পাতা, শিকর ও আঠা।
কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়
(১) অম্বল এসিডিটি দেখা দিলে -0.65 গ্রাম পরিমাণ আকন্দ পোড়া ছাই জল পান করলে সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাওয়া যায়।
(২) পেট কামড়ানো বা পেট জ্বালায় আকন্দ পাতার সোজা দিকে সরিষার তেল মাখিয়ে পাতাটি অল্প গরম করে পেটের উপর রাখলে বা সেঁক দিলে পেট কামড়ানো বা পেট জ্বালা বন্ধ হয়।
(৩) শুল ব্যাথায় আকন্দ পাতার সোজা দিকে সরিষার তেল মেখে অল্প গরম করে পেটের উপর ধরলে পেটের ব্যথা ভালো হয়।
(৪) শোথ বা ফোলা রোগের আকন্দ বিশেষ উপকারী। শোথজনিত বা ফোলাজনিত কারনে কোন স্থান ফুলে উঠলে ওই খোলা স্থানে আকন্দ পাতা বেঁধে রাখলে দ্রুত উপকার হয়।
(৫) প্লীহা বড় হলে-0.65 গ্রাম পরিমাণ আকন্দপোড়া ছাই দইসহ খেলে দ্রুত সংকুচিত হয় রোগ ভালো হয়
(৬) শ্বাস কষ্টে আকন্দের শিকড়ের ছাল প্রথমে গুঁড়ো করে তারপর আকন্দের আঠায় ভিজিয়ে রেখে পরে শুকিয়ে নিতে হবে। এরপর তা চুরুট বানিয়ে ধূমপান করলে শ্বাসকষ্ট ভালো হয়।
(৭) নিউমোনিয়া জনিত বেদনা আকন্দ পাতার সোজা দিকে ঘি মেখে ব্যথার জায়গায় বসিয়ে লবণের পুটলি দিয়ে সেঁক দিলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায়।
(৮) কান কট কট করলে পুরনো ঘি আনন্দ পাতায় মেখে মৃদু আগুনে ঘি মাখানো পাতা সেঁকতে হবে। তারপর ওই পাতার রস বের করে কানের ভিতরে সহ্য ক্ষমতা অনুযায়ী 5 ফোঁটা ফেলে তুলা দ্বারা কিছুক্ষণ কান বন্ধ করে রাখলে কান কটকটি রোগ ভালো হয়।
(৯) হজম শক্তি কমে গেলে ২ গ্রাম পরিমাণ শুকনো আকন্দ মূল গুঁড়ো করে খেলে ক্ষুধা বৃদ্ধি পায়।