ডায়ারিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা

সাধারণত ডায়ারিয়া বলতে বুঝি বারে বাড়ে পায়খানা যাওয়া বা পায়খানার বেগে সমস্যা। প্রাকৃতিক চিকিৎসা মতে এই ধরণের সমস্যার মূল কারণ হল শরীরের মধ্যে জমে থাকা যা শরীরে পুরোপুরি বের করতে পারেনা তার স্বভ্যবিক দৈনন্দিন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, যেই জমে থাকা বিষ অতিরিক্ত তরল জাতীয় জিনিস ক্ষরণ করে বের করার চেষ্টা করে, ফলে বারে বারে পায়খানা পায় এবং যেতে হয়। এছাড়া দৈনন্দিন খাবারের অভ্যাস এর মাধ্যমেও বাইরের থেকে কোন জীবাণুর আক্রমনেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন হাত ভালোভাবে পরিষ্কার না করে খাওয়া বা অপরিষ্কার জায়গায় খাবার খাওয়া ইত্যাদি।

আধুনিক চিকিৎসার ধারনা অনুযায়ী বলা, সাধারণত : অন্ত্রে ১০ লিটরের মতো তরল জাতীয় জিনিস ধরে রাখার ক্ষমতা থাকে কিন্তু যদি কোনো কারণে তার বেশী অন্ত্রে জমে যায় তখন বারে বারে পায়খানার বেগ আসে।

আয়ুর্বেদের ধারণা অনুযায়ী এই সমস্যা হয় ত্রিদোষের অসমতার জন্য অর্থাৎ বায়ুর অধিক্য জনিত কারণে। ‘ অপান বায়ু ‘ মল, মূত্র, শুক্র এই ক্রিয়াগুলিকে পরিচালনা করে। প্রাথমিক ভাবে বায়ুর অধিক্য মূল কারণ হলেও পিত্ত দোষ দীর্ঘদিন অবদমিত থাকার জন্য রোগীই খুব সহজপাচ্য খাবারও হজম করতে সক্ষম হয়না।

প্রাকৃতিক চিকিৎসা :

(১) বারে বারে পায়খানা যাওয়ার ফলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমানে জল এবং লবন জাতীয় জিনিস বেরিয়ে যায় ফলে সারাদিন প্রচুর পরিমানে লবন মিশ্রিত জল খাওয়াতে হবে, রোগীকে যে জল বা সরবত দেওয়া হবে অবশ্যই ফোটানো জলে করতে হবে।

(২) এই অবস্থায় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কমে যায়। প্রাথমিক অবস্থা কাটিয়ে ওঠার পর সামান্য ফলের রস বা সিদ্ধ সব্জির সুপ অল্প পরিমানে দেওয়া যেতে পারে। কারণ এই দুই মাধ্যমে যে ব্যাকটেরিয়াগুলিকে মেরে ফেলতে বিশেষ বিশেষ ভূমিকা রাখে।

( ৩) এছাড়া গাজরের স্যুপ বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রাখে কারণ এই গাজরের সুপে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস , ক্যালসিয়াম, সালফার জাতীয় খনিজ পদার্থ থাকে যা অন্ত্রের প্রদাহকে সরিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

(৪) আমছাল এবং জামছাল অল্প পরিমানে নিয়ে এককাপ জলে সারারাত্রি ভিজিয়ে রেখে সকালে খাওয়া অভ্যাস করা – যার মাধ্যমে অন্ত্রের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে অথবা আমের বীজকে শুকিয়ে গুঁড়ো করে ১ চামচ ও ¹ চামচ মধু মিশিয়ে সকালে খালিপেটে খাওয়া।

(৫) ডায়ারিয়াতে পেটে ঠান্ডা জলের পট্টি ১৫ মিনিট দেওয়া বা ঠান্ডা জলে হিপ বাথ ২০-৩০ মিনিট দেওয়া।

(৬) কলা এবং রসুন ব্যবহার করে ডায়ারিয়াকে নিয়ন্ত্রণ আনা যায়, কারণ কলাতে প্রচুর পরিমানে পেফটিন আছে যা শরীরের মধ্যে উপকারী ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে সাহায্য করে এবং রসুন এক জীবাণু প্রতিরোধকারী ভূমিকা আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *